আঞ্জন

আঞ্জন, ছবিঃ জোবায়ের রায়হান, নোয়াখালী থেকে তোলা

আঞ্জন গোত্রের (সিনসিডী) চারটি গনের অধীন মত সাতটি প্রজাতি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। অন্যসব টিকটিকিদের চেয়ে আঞ্জনদের আঁইশ অপেক্ষাকৃত ছোট এবং একটি আঁইশ অন্যটির উপর দিয়ে এমনভাবে উঠে থাকে যে দূর থেকে দেখলে গা মসৃণ বলেই মনে হবে। আঞ্জনের গা চিকচিক করে। এদের পা অপেক্ষাকৃত ছোট। এরা আদ্র জায়গায় থাকতে পছন্দ করে। আঁইশ না গুনে একটি আঞ্জনের একটি আঞ্জনের প্রজাতি নির্ণয় করা খুবই কঠিন। প্রায় আঞ্জন লালছে-বাদামী বা বাদামী রঙের হয়। এদের ঠোঁট ও পেটের পাশে অপরাপর রঙ থাকতে পারে। কেউ ধূসর বা সাদা। সব আঞ্জনের জিহ্বা আঁইশের ন্যায় পিরকা দিয়ে ঢাকা। পিড়কাগুলি একটি অন্যটির উপর ঢেকে থাকে(ইমব্রিকেট) পিড়কার অগ্রভাগ খাঁজ কাটা সারা শরীরে গোলাকার আঁইশগুলো ইমব্রিকেটভাবে সাজানো থাকে। মাথার উপরে সুসামঞ্জস্য বর্ম আছে। কোন উর্বাস্থিত বা অবসারনীপূর্ব ছিদ্র নেই। দাঁত প্লুরোডোন্ট।

আমাদের দেশের সর্বত্র, সেন্টমার্টিন থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আঞ্জন দেখা যায়।  চট্টগ্রামের অনেকেই এঁকে সাপের ভাই ‘টাপ’ বলে ডাকে। পুকুরপাড়ে, নর্দমার ধারে যেখানে মরা পঁচা পাতা থাকে মূলত সেখানে ওদের বাস। তবে পুকুরের কচুরিপানায় এদের পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায়।  পানিতে সাঁতরাতেও এঁরা যথেষ্ট অভ্যস্ত।

আঞ্জনের চোখের নিচের পাতায় আইশ আছে। কানের ছিদ্র অর্ধগোলাকৃতি, শরীরের মাঝখানে ৩০ থেকে ৩৪ টি সারিতে আঁইশ আছে। পা মোটামুটি লম্বা। আঙুল হয় মসৃণ নয় সামান্য স্ফীত পট্টযুক্ত চতুর্থ পদাঙ্গুলিতে পট্টের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৮। পেছনের পা কব্জি বা কনুই পর্যন্ত পৌঁছায়। এঁরা মাটিতে গর্ত করে দিম পাড়ে। ডিমের সংখ্যা ২০ বা তারও বেশি। দেহ ১২৫ মিলিমিটার এবং লেজ ১৬৫ মিলিমিটার।