মেছো বিড়াল (Felis viverrina) এখনো এদেশে দুর্লভ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় নি। চেহারা-আদল এবং গায়ের ডোরা প্রায় বাঘের মত হওয়ার কারণে এ প্রাণীকে অনেকেই ভয় পান। কেউ বলেন মেছো বাঘ, ছোট বাঘ, বাঘুইলা বা মেচি বাঘ। এদেরকে কোন কোন এলাকায় বাঘ বলার যথেষ্ট কারন রয়েছে। মেছো বিড়াল লেজসহ লম্বায় সাড়ে তিনফুট। ওজনে ১২-১৩ কেজি ভারী দেহের সাথে খাটো পা এদের আকৃতি অন্য সব বিড়াল থেকে কিছুটা আলাদা করে ফেলে। সামান্য বা আলগোছ হলুদে মেশানো ধূসর রঙের চামড়ায় মোটামুটি লম্বালম্বিভাবে কয়েক সারি বা গাড় হলুদ ডোরা রয়েছে।

মেছো বিড়াল বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় পাওয়া যেতে পারে । তবে ঝোপঝাড় বা জঙ্গলযুক্ত এলাকায় ওদের দেখা মেলে বেশি। সকল বনাঞ্চলেই ওরা কমবেশি আছে। তবে এদের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
মেছো বাঘ মূলত মাছ এবং কাঁকড়াভুক হলেও এদের খাদ্য তালিকায় শামুক, মোরগ-মুরগি, হাঁস, ছাগল, ভেড়া এবং বাছুর অন্তর্ভুক্ত। খাদ্যাভাব দেখা দিলে ওরা মানুষের ঘরে ঢুকে শিশু বা বাচ্চা তুলে নিএ যায়। এ কাজটি ওরা করে সাধারণত সন্ধ্যা বা রাতের বেলা। তখন গ্রামের আলোআধারিতে পুরো প্রানিতিকে না দেখতে পারার জন্য অনেকেই একে বাঘ বলে চিহ্নিত করে থাকেন। মাছ ধরার জন্য মেছো বিড়াল পানিতে নামে না। পানির উপর কোন গাছের ডালে বা পানির উপর জেগে থাকা কোন পাথরের উপরে বসে থাবা দিয়ে শিকার ধরে।
তথ্যসুত্রঃ ড. আলী রেজা খান (বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী), ছবিঃ সংগ্রহ