কাপ্তাই লেক

কাপ্তাই লেক
কাপ্তাই লেক

কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মনুষ্যনির্মিত হ্রদ। কর্ণফুলী নদীর প্রবাহে নির্মিত এই লেককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১৯৫৬ সালে কর্ণফুলি নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হলে রাঙামাটি জেলার ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি ডুবে যায় এবং এ হ্রদের সৃষ্টি হয়। শুধু মৎস্য আহরণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনই নয়, কাপ্তাই হ্রদ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য সেরা গন্তব্য। তাই আপনিও বেড়িয়ে আসুন বাংলাদেশের স্বর্গ কাপ্তাই লেক।

হ্রদের স্বচ্ছ পানিতে নৌকা নিয়ে ভাসতে ভাসতে বহুদূর পর্যন্ত চলে যাওয়া যায়। দল বেঁধে নৌ বিহার কিংবা প্যাডেল বোটে চড়ে হ্রদ ভ্রমণ করার সুযোগও রয়েছে এখানে। এছাড়া স্পিডবোট/নৌকা রিজার্ভ শুভলং ঝর্ণায় ঘুরে আসা যায় সহজেই। চাইলে কর্ণফুলি নদীতে কায়াকিং করার ব্যবস্থাও আছে।

পাহাড় আর নদীর এমন দৃশ্যের জুড়ি মেলা ভার! ছবিঃ জোবায়ের রায়হান।
পাহাড় আর নদীর এমন দৃশ্যের জুড়ি মেলা ভার! ছবিঃ জোবায়ের রায়হান। জুম পর্যটন কেন্দ্রের ”নীল মেঘের দেশ” থেকে তোলা।

কিভাবে যাবেন

সড়ক পথেঃ ঢাকার মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল থেকে প্রতিদিন সউদিয়া, ডলফিন, এস আলম সহ আরও কিছু বাস রাঙামাটি-কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা, ভাড়া-৫০০-৬৫০ টাকা। এছাড়াও আপনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে রাঙামাটি যেতে পারেন। চট্টগ্রামের কাপ্তাই বাস ষ্টেশন থেকে একটু পরপরই কাপ্তাইয়ের উদ্দশ্যে বাস ছেড়ে যায়। সময় লাগে ২ ঘণ্টার মত, ভাড়াঃ ১০০-১২০ টাকা।

রেলপথেঃ রেলপথে যেতে চাইলে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া যাবে। কারণ, রাঙামাটিতে কোন রেল যোগাযোগ নেই। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকে বাসে সরাসরি রাঙামাটি।

ঢাকা থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি, মহানগর প্রভাতি, তূর্ণা নিশিথা সহ বেশ কিছু ট্রেন চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করে। ট্রেনে যাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বেই শিডিউল জেনে নেবেন, এবং অগ্রিম টিকেট কেটে রাখবেন। এতে পরবর্তীতে বিড়ম্বনায় পড়বেন না। ভাড়াঃ শ্রেণিভেদে ৮০ থেকে ১০৯৩ টাকা। ভিজিট করুন বাংলাদেশ রেলওয়ের সাইটে সময়সূচী এবং ভাড়া সম্পর্কে জানতে।

কোথায় থাকবেনঃ

কাপ্তাইয়ে রাত্রি যাপনের জন্য এখনো তেমন ভালো মানের হোটেল নেই। তবে এখানে আসার আগে অনুমতি নিয়ে রাখলে কাপ্তাইয়ের সরকারি রেস্ট হাউসে থাকতে পারবেন। এছাড়া রাত কাটানোর জন্য চলে যেতে পারেন রাঙামাটি শহরে। সেখানে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল ও কটেজ রয়েছে। পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, হোটেল গ্রীন ক্যাসেল, হোটেল মাউন্টেন ভিউ , হোটেল আল-মোবা সহ বেশ কিছু হোটেল রাত্রিযাপন করতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৫০০-৩০০০ টাকা।  

এছাড়াও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের কিছু হোটেল রয়েছে রাঙামাটিতে। এগুলোতেও থাকা-খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা আছে।

কী কী দেখবেনঃ

২। শুবলং ঝর্না

৩। রাঙামাটি রাজার বাড়ি

৪। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র

৫। ঝুলন্ত ব্রিজ

৬। ঝুম পর্যটন কেন্দ্র ও চা বাগান

৭। কাপ্তাই শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান

৮। কর্ণফুলী পেপার মিল

যা করবেনঃ

১। কাপ্তাই হ্রদে নৌকা ভ্রমণ

২। কর্ণফুলী নদিতে কায়াকিং

৩। স্থানীয় আদিবাসিদের খাবারের স্বাদ গ্রহণ

৪। আদিবাসিদের সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি

৫। ক্যাবল কারে চড়তে পারেন

ফিচার ছবি কৃতজ্ঞতাঃ The Skyscraper

আরও ভিজিট করুনঃ নিঝুম দ্বীপ গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি কান্তজিউ মন্দির