
কক্সবাজারের কুদুম গুহা বহুদিন পর্যন্ত লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে ছিল। কয়েক বছর আগে এটির অবস্থান উন্মোচন করে একদল ভ্রমণকারী। তাই আপনিও ঘুরে আসুন রোমাঞ্চকর কুদুম গুহা ।
নানা ধরণের বন্যপ্রাণী ও জলজ প্রাণীর আবাস এই গুহাটি টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ভেতরে অবস্থিত। টেকনাফের হোয়াইক্যং বাজার থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে গেলেই কুদুম গুহার দেখা মেলে। বেলে-পাথরে তৈরি এই প্রাকৃতিক গুহাটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট।
বেলে-পাথরের ফাঁক দিয়ে গুহার দেয়াল বেয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে বলে সারা বছরই এর প্রবেশপথ পানিতে ডুবে থাকে। ভেতরে প্রবেশ করলে পানির গভীরতা বাড়তে থাকে। বর্ষাকালে ভেতরে পানির উচ্চতা ৫-৬ ফুট পর্যন্ত হলেও শীতকালে হাঁটুপানি ভেঙেই ভেতরে প্রবেশ করা যায়।গুহার ভেতরটা সম্পূর্ণ অন্ধকার, জোরালো আলো ছাড়া ভেতরটা দেখা বেশ কঠিন। যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে গেলে গুহার ভেতরের আদিম সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
সময়ঃ ৫-৬ ঘণ্টা
বাজেটঃ ৪০০-৫০০ টাকা (কলাতলী-কুদুম গুহা-কলাতলী)
কিভাবে যাবেন
ঢাকার কমলাপুর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, সেন্ট মার্টিন পরিবহন সহ বেশ কিছু বাস সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে প্রায় ৮ ঘণ্টা এবং ভাড়া ৭০০-১৫০০ টাকা।
কক্সবাজারের কলাতলী মোড় থেকে লোকাল সিএনজি অটোরিকশা, বাস, মাইক্রো বা চান্দের গাড়ি চেপে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে সরাসরি চলে যাবেন টেকনাফের শ্যামলাপুর বাজারে। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা।
শ্যামলাপুর বাজার থেকে ব্যাটারিচালিত অটো রিজার্ভ নিয়ে চলে যাবেন কুদুম গুহায়। অটো চালকই আপনাদের গাইড হিসেবে গুহার ভেতরে যাবে। অটোতে ৫-৬ জন বসতে পারবেন, আপ-ডাউন ভাড়া নেবে ৫০০-৬০০ টাকা। অভয়ারণ্যের প্রবেশ ফি ২০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
অভয়ারণ্য এলাকায় থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। চাইলে কুদুম গুহা দেখে দিনে দিনেই কক্সবাজারে ফিরতে পারবেন। কক্সবাজার সৈকতের কাছাকাছি প্রচুর হোটেল/মোটেল রয়েছে। তবে চাইলে টেকনাফের কোন হোটেলে রাত কাটিয়ে পরদিন সেন্ট মার্টিন চলে যেতে পারেন।
আরও যা দেখবেন
ইনানী সৈকত, নাফ ট্যুরিজম পার্ক, দেবতা পাহাড়, মাথিনের কূপ
পরামর্শ
১। কুদুম গুহায় বেড়াতে গেলে অবশ্যই কিছু শুকনা খাবার ও পানি নিয়ে নিন। অভয়ারণ্য এলাকায় কোন খাবারের দোকান পাবেন না।
২। অভিজ্ঞ লোক ছাড়া গুহায় প্রবেশ করবেন না, যারা সাঁতার জানেন না তারা আগেই খোঁজ নিন পানির গভীরতা কেমন।
৩। প্রবল বর্ষা/বৃষ্টির সময় গুহায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকুন। পানিতে নামার জন্য অতিরিক্ত কাপড় সঙ্গে রাখুন।
৪। অভয়ারণ্য এলাকায় কোন ধরণের আবর্জনা/ময়লা ফেলবেন না।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ইব্রাহীম জনি ও হাসান মাহমুদ তানভীর